এক গুনাহগার যুবকের তাওবা

একব্যক্তি ইবরাহীম বিন আদহামের নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, “আবূ ইসহাক! আমি নিজের ওপর অনেক যুলুম করেছি। আমাকে এমন কিছু শুনান যা আমার অন্তরে দাগ টেনে দিবে আর আমি গুনাহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।”

তিনি বললেন, “যদি তুমি পাঁচটা কথা গ্রহণ করতে ও মানতে পার, তবে কখনোও গুনাহ তোমার ক্ষতি করতে পারবে না আর দুনিয়ার ভোগবিলাস তোমাকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করতে সক্ষম হবে না।”

লোকটি বলল, “আবূ ইসহাক! কী সেই পাঁচ কথা?”

তিনি বললেন, “প্রথম কথা হল : তুমি আল্লাহর নাফারমানি করতে চাইলে তাঁর রিযক খাবে না।”

লোকটি বলল, ” তাহলে কী খাব! পৃথিবীতে যত রিযক সবি তো তাঁর।”

তিনি বললেন, “এটা কেমন কথা! তুমি তাঁর রিযক খেয়ে তাঁরই নাফারমানি করবে? এটা কী ভাল কথা?”

লোকটি বলল, “না, এটা ভাল কথা না।”

তিনি বললেন, “দ্বিতীয় কথা হল : তুমি তাঁর নাফারমানি করতে চাইলে তার জমিন থেকে বেরিয়ে গিয়ে কর। তাঁর জমিনে নয়।”

লোকটি বলল, “এটা তো প্রথমটার চেয়েও কঠিন। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু সবি তো তাঁর জমিন। তাহলে কোথায় যাব?!”

তিনি বললেন, “এটা কেমন কথা! তাঁর রিযক খেয়ে, তাঁর জমিনে থেকে তাঁরই নাফারমানি করবে? এটা তো খুবই খারাপ কথা।”

লোকটি বলল, “তৃতীয় কথা বলুন।”

তিনি বললেন, “তাঁর রিযক খেয়ে, তাঁর জমিনে থেকে তাঁরই নাফারমানি করতে চাইলে এমন স্থানে কর, যেখানে তিনি তোমাকে দেখতে পাবেন না।”

লোকটি বলল, “ইবরাহীম! এটা কীভাবে সম্ভব?! তিনি তো সবকিছুই দেখেন। অনুপরিমাণ জিনিসও তাঁর জ্ঞানের ও দর্শনের বাইরে নয়।”

তিনি বললেন, “তাঁর রিযক খেয়ে, তাঁর জমিনে থেকে তাঁকে দেখিয়ে তাঁরই নাফারমানি করবে? এটা তো ভাল কথা নয়।”

লোকটি বলল, “এটা অবশ্যই ভাল কথা নয়।”

তিনি বললেন, “এবার চতুর্থ কথা শুন। আজরাইল তোমার জানকবজ করতে আসলে তাকে বলবে, আমাকে কিছুদিন সময় দেন, যাতে তাওবা ও কিছু ভাল আমল করে নিতে পারি। কী, এ সুযোগ আছে?”

লোকটি বলল, “না, এ সুযোগ থাকতেই পারে না।”

তিনি বললেন, “যখন তুমি জান যে, আজরাইলকে কিছুক্ষণ থামিয়ে তাওবা করতেও পারবে না, তাহলে নাজাত কীভাবে পাবে?”

লোকটি বলল, “এবার পঞ্চম কথা বলুন।”

তিনি বললেন, “কিয়ামতের দিন জাহান্নামের ফেরেশতারা তোমাকে টেনে-হেচড়ে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার সময় কী জোর করে চলে আসতে পারবে?”

লোকটি বলল, “এটা অসম্ভব। তারা আমাকে ছেড়েও দিবে না আর ওজর-আপত্তিও শুনবে না।”

তিনি বললেন, “তাহলে তোমার নাজাতের উপায় কী ?

লোকটি বলল, “ব্যস, এ ওয়ায-নসীহতই আমার জন্য যথেষ্ট। আমি খালেস নিয়্যাতে আল্লাহর কাছে তাওবা করলাম।”

তারপর লোকটি ইবরাহীম বিন আদহামের সাহচর্য গ্রহণ করে বাকী জীবন আল্লাহর ঈবাদত-বন্দেগীতে কাটিয়ে দেয়। (আত-তাওওয়াবীন, ২৮৭-২৮৮)

Source

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88