হতাশা, ভাল না লাগা দূর করার জন্য কিছু টিপস

১.আমাদের হতাশ হওয়ার পিছনে প্রধান কারণ হল রবের সাথে সম্পর্ক মজবুত না থাকা। আল্লাহ্ জাল্লা শানুহু কুরআনে বলেছেন, “জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।” ( সূরা রাদ : ২৮)

তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদাত করা। ফরজ আমলের ব্যাপারে সতর্ক থাকা, বেশি থেকে বেশি নফল আমল করা। আপনি যখন নিজেকে অামলে ব্যস্ত রাখবেন তখন আপনার ভাল না লাগার বা হতাশ হওয়ার কোন সময়ই থাকবে না। যখনই খারাপ লাগবে সাথে সাথে জিকিরে মশগুল হয়ে যাবেন।

২.রাতের সালাতের প্রতি যত্নশীল হওয়া। তাহাজ্জুদ এমন এক তীর যা কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। নিয়মিত রাতের সালাতের ব্যাপারে যত্নশীল হোন। হোক সেটা ঘুমানোর আগে বা ঘুম থেকে উঠে। রাতে ঘুমানোর আগে এটলিস্ট দুই রাকাত সালাত আদায় করে, তওবা করে তারপর ঘুমাবেন। কিয়ামুল লাইলের অফুরন্ত সওয়াব আপনার আমল নামায় যুক্ত হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ্। পাশাপাশি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত হবে যা আপনার জীবনে প্রশান্তি নিয়ে আসবে।

৩.বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা। কুরআন এমন এক নিয়ামত যা অন্তর ঠান্ডা করে দেয়। এ এক জীবন্ত কিতাব! কুরআন পড়ুন, অনুবাদ পড়ুন, সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত তফসীর পড়ুন। মনে হবে কুরআন যেন ঠিক আপনার বর্তমান সিচুয়েশনের দিকে ইঙ্গিত করেই কথা বলছে। আপনি কুরআন পড়ার সাথে সাথেই অন্তরে এক ধরণের প্রশান্তি অনুভব করবেন। এটা একদম পরীক্ষিত সত্য। তাই যখনই সুযোগ পান কুরআন নিয়ে বসে যান। আজকাল সবার কাছেই মোবাইলে কুরআনের এপস আছে। রাস্তায়, যানবাহনে, ক্লাসে বিরতির মাঝে অযথা সময় নষ্ট না করে কুরআন পড়ুন। মৃদু শব্দে বা শব্দ ছাড়া (বিশেষ করে বোনরা) কেবল মুখ নাড়িয়ে পড়তে পারবেন ইন শা আল্লাহ্।

৪.রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া। আমাদের অধিকাংশ খারাপ লাগা রাত বাড়ার সাথে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। মানুষ ভাল না লাগা, হতাশা দূর করতে বেশিরভাগ সময় রাতের বেলায়ই গোনাহে লিপ্ত হয়। জীবন নিয়ে আফসোসগুলো রাতের শুনশান নিরবতাতেই গভীর হয়। তাই আমাদের উচিত দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া। তাছাড়া এতে তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হওয়া আপনার জন্য সহজ হবে।

৫.যথাসম্ভব একাকি না থাকা। একা থাকলেই শয়তান আমাদের মাঝে বিভিন্ন অাজেবাজে চিন্তা নিয়ে আসে। এসব চিন্তাতে কোন ফায়দা তো নেই বরং তা জীবনটাকে দূর্বিষহ করে তোলে। তাই যথাসম্ভব আমাদের উচিত উত্তম সঙ্গীর সংস্পর্শে থাকা, পরিবারের মানুষদের টাচে থাকা। বাসায় থাকলে বাবা-মার সাথে গল্প করা, ভাই-বোনদের সাথে সময় কাটানো, টুকটাক কাজ করা ইত্যাদি।

৬. গোনাহের উপকরণ থেকে দূরে থাকা। আমরা আমাদের গোনাহের কারণে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরে যাই। ফলে শয়তান আমাদের চেপে ধরে। অশ্লীলতার পাশাপাশি তার আরেকটি বড় হাতিয়ার হল হতাশা। শয়তানকে সে সুযোগ দেয়া উচিত না। আমাদের দেখা দরকার কোন মাধ্যমগুলো আমাদের গোনাহের দিকে প্ররোচিত করছে সে অনুযায়ী ব্যবস্হা গ্রহণ করা উচিত।

৭.হতাশা দূর করার জন্য আপনার রবের নিকট দূয়া করুন। দুঃখ, দুশ্চিন্তা দূর করার দুআগুলো পড়ুন। রবের দরবারে কাকুতি মিনতি করে দুআ করুন তিনি যেন আপনার পথ চলা সহজ করে দেন। আল্লাহর কাছে চাওয়ার কোন বিকল্প নেই।

সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে এই দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। এখানে ছোট-বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সবাইকেই যেতে হবে। এটা আমাদের থাকার জায়গা না। এখানে আমরা সুখে-শান্তিতে থাকতে আসিনি। মূল গন্তবে পৌঁছানোর জন্য এটা জাস্ট একটা রাস্তা। আমাদের আল্টিমেট প্রশান্তি তো মূল বাসস্থান জান্নাতে!

এছাড়া আরেকটা কথা খুব মনে রাখা দরকার।আপনি যে হতাশায় পুড়ছেন, নিজের জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছেন এ নিয়ে অন্যদের কিন্তু কোন বিকার নেই। ট্রাস্ট মি, আপনার মানসিক অবস্থা কতটুকু বিপর্যস্ত তা নিয়ে এই দুনিয়ার কারো কিছু যায় আসে না। তো শুধু শুধু নিজে কষ্ট পাবেন কেন?

মাথা থেকে সব হতাশা ঝেড়ে ফেলুন। বেশি বেশি রবের ইবাদাত করুন। এই জীবন অল্প কয়েকদিনের। থাকলো নাহয় কিছু অপ্রাপ্তি?

জান্নাতে আমাদের কোন ইচ্ছা অপূর্ণ থাকবে না।

সূত্র: ফেসবুকের পেজ।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88