নেকড়ে ও খরগোসের শান্তিচুক্তি

নেকড়েদের নেতা একদিন জঙ্গলের খরগোসদের আমন্ত্রণ করল। অতঃপর তাদেরকে সুস্বাদু ভুরিভোজে আপ্যায়িত করার পরে বলল, তোমাদের সাথে আমাদের পুরানো শত্রুতার অবসান চাই। ব্যাঘ্রনেতাদের এই সন্ধি প্ৰস্তাবে খরগোসের দল আনন্দে নেচে উঠলো। তারা নেকড়েদের সঙ্গে চুক্তি করলো যে, এখন থেকে জঙ্গলে সবাই পারস্পরিক নিরাপত্তা ও শান্তির সঙ্গে বসবাস করবে।

ব্যাঘ্রনেতা তার দলের সদস্যদের বলে দিল, তারা যেন সবাই স্ব স্ব গর্তে বা গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকে, যাতে খরগোসেরা নিৰ্ভয়ে বেরিয়ে এসে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে পারে। অতঃপর নেকড়ে নেতা এসে খরগোস নেতাকে এই সুখবর দিল। তাতে খরগোস নেতা আনন্দে লাফিয়ে উঠে বলল, ‘এখন থেকে আমরা সর্বদা আপনাদের সেবায় থাকব এবং অন্যান্য প্ৰাণী কে কোথায় গোপনে বাস করে তা বলে দেব, যাতে আপনারা সহজে তাদের ধরে খেতে পারেন’।

নেকড়ে নেতা এতে ক্রুর হাসি হাসলো। যার মর্ম খরগোস নেতার ছোট্ট মাথায় ঢোকেনি। খরগোস নেতা তার দলকে গিয়ে এ খবর দিলে এবং সবাইকে বেরিয়ে এসে নিশ্চিন্তে বিচরণ করতে বললে তাদের একজন বয়োবৃদ্ধ প্রবীণ নেতা সাবধান করে দিয়ে বলল, ‘নেকড়েদের সঙ্গে তোমাদের শান্তি চুক্তি? এতো স্বপ্ন ব্যতীত কিছুই নয়’। কিন্তু কে শোনে কার কথা? স্বাধীনতার আনন্দে সবাই নাচতে নাচতে ও গান গাইতে গাইতে দলে দলে বাইরে চলে এলো।

অন্যদিকে নেকড়ে নেতার কাছে খরগোস নেতার দেওয়া ওয়াদা এবং অন্যান্য প্ৰাণীদের গোপন বাসার খবর বলে দেওয়ার কথা পাখিরা সারা জঙ্গলে রটিয়ে দিল। তাতে সবাই হুশিয়ার হয়ে গেল এবং খরগোসদের বিশ্বাসঘাতক বলে ধিক্কার দিল ও তাদের থেকে পৃথক হয়ে গেল। ইতিমধ্যে খরগোসের দল সবাই বাইরে এসে জমা হয়েছে। এবং ফুর্তিতে নাচগানে মত্ত হয়ে গেছে। এ সময় নেকড়ে নেতা তার দলকে ইঙ্গিত দিল। যার অর্থ কেবল তারাই বোঝে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা চারদিক দিয়ে এসে খরগোস দলকে ঘিরে ফেলল এবং এক একটাকে টপটপ ধরে ঘাড় মটকাতে লাগলো। খরগোসের দল তখন অন্যান্য প্ৰাণীদের সাহায্য চেয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে আর্তচিৎকার করতে লাগলো। কিন্তু তাতে কেউ সাড়া দিল না। বলা হয়ে থাকে যে, সেদিন থেকেই খরগোসের দল তাদের পিতৃপুরুষদের বোকামিতে লজ্জিত হয়ে অধোবদনে হামাগুড়ি দিয়ে মাটিতে চলাফেরা করে। তারা আর কখনোই নেকড়েদের সঙ্গে শান্তিচুক্তির কল্পনাও করে না। তারা অন্যান্য প্ৰাণীদের সাথে সন্ধি ও মীমাংসা করতে চায়। কিন্তু তাদের কেউ বিশ্বাস করতে চায় না। ফলে তাদের দুর্বিষহ একঘরে জীবন কপালের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

[বিশ্বের বুর্জোয়া ধনতন্ত্রী নেকড়ে নেতাদের চালান ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ গণতন্ত্র ও নারীবাদের টোপ গেলা ও তাদের শান্তির বাণীতে খরগোস নেতারা সাবধান হউন (স.স)]

সূত্রঃ পুরনো আত-তাহরীক

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88