ইসলামের সাথে অন্য ধর্মের পার্থক্য

রচনায়:- ডাঃ জাকির নায়েক

১.ক. অন্যান্য ধর্মের সাথে ইসলামের মৌলিক পার্থক্য-

মূলত প্রতিটি ধর্মই মানুষকে মন্দ দূর করে ভাল হবার পরামর্শ দেয়। কিন্তু ইসলামের পরিধি আরো ব্যাপক। ইসলাম আমাদেরকে ন্যায়-পরায়ণটা অর্জনের প্রকৃতি-সম্মত পথ ও পদ্ধতি দেখিয়ে দেয় কিভাবে ব্যক্তি ও সমাজ জীবন থেকে যাবতীয় মন্দ নির্মূল করা যায়। ইসলাম মানুষের স্বভাব প্রকৃতি ও সমাজের চিন্তা ভাবনা ও রুচি অভিরুচিকে বিবেচনায় রাখে। ইসলাম খোদ সৃষ্টিকর্তা বিধাতা প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার দেয়া মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতির দিক নির্দেশিকা। এ কারণে ইসলামকে ‘দ্বীনুল ফিৎরাহ’ বা মানুষের প্রকৃতি সম্মত জীবন ব্যবস্থাও বলা হয়।

খ. যেমন ইসলামে আমাদেরকে চুরি, ডাকাতি পরিহার করতে বলার সাথে সাথে সে এ ও বলে দেয় যে, কেমন করে সমাজ থেকে এ প্রবণতা নির্মূল করা যাবে-

১. বড় বড় সব ধর্মই শিক্ষা দেয় চুরি ডাকাতি মন্দ কাজ ইসলামের শিক্ষাও তাই। তাহলে অন্য ধর্মের সাথে ইসলামের পার্থক্য কোথায়? পার্থক্যটা হলো চুরি ডাকাতি মন্দ কাজ এ শিক্ষার সাথে সাথে ইসলাম এমন একটি সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণের বাস্তব পদ্ধতি নির্দেশ করে যে সমাজে চুরি ডাকাতির প্রয়োজনই পড়বে না।

২. মানুষের অভাব দুর করতে ইসলাম যাকাতের বিধান দিয়েছে-

ইসলাম বিধান দিয়েছে এমন ব্যক্তির জন্য যাকাতি বাধ্যতাম্যলক যার নিসাব পরিমাণ উদ্ধৃত্ত তাকে। অর্থাৎ বাৎসরিক আয় ব্যয়ের পরে ৮৫ গ্রাম সোনা বা এর সমমূল্যের নগদ অর্থ অথবা অন্যান্য মাল পত্র উদ্ধৃত্ত থাকবে। ২.৫% বা শতকরা আড়াই টাকা প্রতি চন্দ্র বৎসরের শেষে তাকে (অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দিতে হবে)। পৃথিবীর প্রতিটি সম্পদশালী ব্যক্তি যদি সত্যি সত্যিই এই যাকাত আদায় করে তাহলে দরিদ্রতা বলতে পৃথিবীতে কিছু থাকবে না। তখন ভিক্ষা দিতেও একজন ভিখারি খুঁজে পাওয়া যাবে না। (এই হলো ইসলামী অর্থনীতির মাত্র একটি কার্যক্রম। শুধুমাত্র এই যাকাত ব্যবস্থাটুকু কার্যকর হলে হাত পাতার লোক খুঁজতে হবে।)

৩. চুরি ডাকাতির শাস্তি হাত কেটে ফেলা-

চোর ডাকাত প্রমাণিত হলে তার হাত কেটে ফেলার আদেশ দিয়েছে ইসলাম। জ্যোতির্ময় ক্বুর’আন বলছেঃ-

وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُوا أَيْدِيَهُمَا جَزَاءً بِمَا كَسَبَا نَكَالًا مِّنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

”চোর অথবা চোরনী, তোমরা তাদের হাত কেটে দাও এটাই শাস্তি যে কর্ম তারা করেছে তার দৃষ্টান্তমূলক (দেয়া) আল্লাহর তরফ থেকে। আর আল্লাহ মহা শক্তিমান জ্ঞানপূর্ণ। [32]

৪. ইসলামী বিধি বিধান প্রতিষ্ঠিত হলে তার কল্যাণ ফলাফল হাতে হাতে পাওয়া যায়-

আমেরিকা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর মধ্যে উন্নততম। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে চুরি, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে তার আছে সর্বোচ্চ রেকর্ড। এহেন আমেরিকায় যদি ইসলামের পূর্নাঙ্গ বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়- একদিকে প্রতিটি সার্মথ্যবান ব্যক্তি রীতিমতো যাকাত আদায় করছে অপর দিকে নারী বা পুরুষ চোর প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হাত কেটে ফেলা। তাহলে আমেরিকায় চুরি, ডাকাতির বর্তমান প্রবণতা বাড়বে, না একই রকম থাকবে, নাকি একেবারে কমে যাবে? সঙ্গত ভাবেই তা কমে যাবে।তদুপরি এই ধরনের কঠিন আইন থাকলে অনেক স্বভাবের চোরও নিজেকে এই ভয়ঙ্কর পরিণতি থেকে রক্ষা করতে চেষ্টা করবে। অর্থাৎ চুরি ডাকাতি প্রায় বিলুপ্ত। একথা মানে হতে পারে যে, পৃথিবীব্যাপী চুরি ডাকাতির বর্তমান যে হার তাতে হাত কাটা আইন চালু হলে লক্ষ লক্ষ লোক এমন দেখা যাবে যাদের হাত কাটা। বিষয়টা হলো যে মুহুর্তে এই আইন ঘোষণা করা হবে তার পরের মুহুর্ত থেকেই এ প্রবণতা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে কমে আসতে থাকবে। পেশাদারী চোরও এ পথে পা ফেলার আগে একবার ভেবে নেবে ধরা পড়লে তার পরিণতি কি হবে। শাস্তির ভয়াবহতাই চোরের ইচ্ছাকে দমন করার জন্য যথেষ্ট। তখন নিতান্ত দুরাত্মা ও দুর্ভাগা ছাড়া এ কাজ আর কেউ করবে না সামান্য কয়েকটি লোকের হয়তো হাত কাটা যাবে কিন্তু কোটি কোটি মানুষ লাভ করবে নিরাপত্তা, শান্তি এবং সর্বস্ব হারাবার ভয় থেকে মুক্তি।

ইসলামী বিধান এই রকম বাস্তব-ধর্মী এবং প্রত্যক্ষভাবে ফলদায়ক-

গ. যেমন ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে নারী ধর্ষণ ও উৎপীড়ন। সাথে সাথে কার্যকর করতে বলেছে নারী ও পুরুষের পারস্পরিক সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় উভয়ের কঠোরভাবে পালনীয় হিজাব বা পর্দা এবং সাব্যস্ত ধর্ষকের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড-

১. ধর্ষণ ও উৎপীড়নের শেকড় শুদ্ধ নির্মূল করার পরামর্শ দিয়েছে-

বড় বড় সকল ধর্ম নারী ধর্ষণ ও উৎপীড়ন জঘন্য অপরাধবলে ঘোষণা করে। ইসলামের শিক্ষাও তাই। তাহলে কি পার্থক্য ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের? পার্থক্যের বিষয়টা হলে ইসলাম শুধুমাত্র নারী মর্যাদার ওয়াজই করেনা বা ধর্ষণ ও উৎপীড়নকে ঘৃণার সাথে জঘন্য অপরাধ হিসেবে পরিত্যাগ করতেই বলে না। সাথে সাথে সুস্পষ্ট নির্দেশনাও দেয় কিভাবে সমাজ থেকে এই অপরাধ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

২.পুরুষের পর্দা-

হিজাব বা পর্দা ইসলামের একটি বিধান। জ্যোতির্ময় ক্বুর’আন প্রথম উল্লেখ করেছে পুরুষের পর্দা। তারপরে তা নারীর জন্য-

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

“(হে রাসূল!) মোমেন পুরুষদের বলোঃ তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে। এবং নিজেদের লজ্জা-স্থান সমূহ হেফাজত তরে। এটা তাদের আরো পবিত্র হয়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। (তাদের চরিত্র নির্মাণের জন্য) যা কিছুই তারা করে অবশ্য অবশ্যই আল্লাহ সে সব কিছু সম্পর্কেই খবর রাখবেন। [33]

যে মুহুর্তে একটি পুরুষ একজন নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করলো যদি কোনো ধরনের অশ্লিল চিন্তা মাথায় এসে যায় এই ভয়ে সাথে সাথে তার দৃষ্টি নামিয়ে নেবে।

৩. নারীর পর্দা-

ক্বুর’আন নারীর পর্দা সম্পর্কে বলছেঃ-

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ

“আর (হে নবী) মুমিন স্ত্রীলোকদের বলুন! তারা যেন নিজেদের চোখ অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সমূহের যথাযথ সংরক্ষণ করে। আর যেন প্রদর্শনী না করে তাদের রুপ-সৌন্দর্য ও অলংকারের। তবে এ সবের মধ্যে যা অনিবার্যভাবে প্রকাশ পেয়ে যায়। আর তারা যেন ঝুলিয়ে দেয় তাদের ওড়না তাদের বুকের ওপর। আর তারা প্রকাশ করবে না তাদের রুপ-সৌন্দর্য তাদের স্বামী অথবা তাদের পিতা অথবা তাদের স্বামীদের পিতা (শ্বশুর) অথবা তাদের পুত্র। [34]

নারীর জন্য হিজাবের পরিধি তার সম্পূর্ণ দেহ আর্বত থাকতে হবে ঢিলেঢালা কাপড়ে। শুধু কব্জী পর্যন্ত হাত এবং মুখ মণ্ডল খোলা থাকতে পারে যদি তারা চায়, তা না হলে তাও ঢেকে নিতে পারে। অনেক ইসলামী বিশেষজ্ঞ মুখমণ্ডল ঢাকারও পরামর্শ দেন।

৪. হিজাব উৎপীড়ন থেকে রক্ষা করে-

নারীকে কেন আল্লাহ হিজাব ধারণ করতে বলেছেন ক্বুর’আনে তা বলা হয়েছে-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

হে নবী! আপনার স্ত্রীগণ ও কন্যাগণ এবং ঈমান গ্রহণকারী নারীদেরকে বলে দিন তারা যেন ঝুলিয়ে দেয়া তাদের নিজেদের ওপর তাদের বড় চাদর জাতীয় কিছু (যখন বাইরে যাবে)। এটা তাদের পরিচিতির জন্য ন্যুনতম (পোশাক) তাহলে তারা আর উৎপীড়িত হবে না। আর আল্লাহ তো আছেনই ক্ষমা দানকারী দয়াময়।[35]

ক্বুর’আন বলে, নারীকে এই কারণে হিজাব পড়তে বলা হয়েছে যেন তারা রুচিশীলা মহিলা হিসাবে পরিচিত হয়। এটা তাদেরকে উৎপীড়ন থেকে রক্ষা করবে।

ধর্ষণের সর্বোচ্চ রেকর্ড –

আমেরিকায় ১৯৯০ সালে এফ, বি, আই এর রিপোর্ট অনুযায়ী ১,০২,৫৫৫ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। মন্তব্যে বলা হয়েছে আনুমানিক সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ঘটনার অভিযোগ করা হয়। তাহলে সত্যিকারের পরিমাণ বের করতে হলে ৬.২৫ দিয়ে গুন করতে হবে দাঁড়ালো ৬,৪০,৯৬৮ এ সংখ্যাকে ৩৬৫ দিয়ে ভাগ করলে প্রতিদিন ১৭৫৬ টি ধর্ষণের ঘটনা আমেরিকায় ঘটছে।

আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এর ন্যাশনাল ক্রাইম ভিকটিমাইজেশন সারভে ব্যুরো অব জাস্টিস এর রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে ৩,০৭,০০০ ধর্ষণের অভিযোগ রেকর্ড করা হয়েছে। তারপর বলা হয়েছে সংঘটিত ঘটনার সর্বোচ্চ ৩১ শতাংশ অভিযোগ দায়ের করা হয়, তাহলে ৩,০৭,০০০ * ৩,২২৬ =৯,৯০,৩২২ টি ধর্ষণের ঘটনা ১৯৯৬ সালে ঘটেছে। প্রতিদিন ২৭১৩ অর্থাৎ প্রতি ৩২ সেকেন্ড পৃথিবীর সভ্যতম দেশে একজন নারী ধর্ষিত হয়। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ এর এই পার্থক্য লক্ষ্য করার মতো। মনে হয় আমেরিকার ধর্ষকরা দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

এফ , বি, আই এর রিপোর্টে বলা হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ সংঘটিত ঘটনার মাত্র ১.৬% ভাগ। এদিকে অভিযুক্তদের ৫০ শতাংশ বিচারের আগেই বেরিয়ে যায়। তার মানে ০.৮% ভাগ ধর্ষক বিচারের সম্মুখীন হয়। অন্য কথায় কোনো ধর্ষক ১২৫ জন নারীকে ধর্ষণ করলে এর মধ্যে তার ধরা পড়া শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা মাত্র একবার। অনেক ধর্ষণকারী পুরুষ এটাকে একটা নিশ্চিন্ত বাজী ও জুয়ার মতো ধরে নিতে পারে। কেননা ১২৫ বারে ধরা পড়ে শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা মাত্র একবার।

রিপোর্টে আরো বলা হয় ০.৮ শতাংশের যারা বিচারের সম্মুখীন হয় তাদরে ৫০% শতাংশেই এক বছরের কম, কারা ভোগ করে। যদিও আমেরিকার আইনে তার বিধান আছে ৭ বছরের। ধর্ষণের দায়ে প্রতিবার ধরা পড়লে বিচারকরা তাদের প্রতি কোমল দণ্ডের রায় দেন। ভেবে দেখার মতো বিষয় বটে! অতএব হিসেব অনুযায়ী একজন ধর্ষক ১২৫ বার ধর্ষণ করলে, ধরা পড়র সম্ভাবনা মাত্র একবার। আর ধরা পড়লে শাস্তির সম্ভাবনা মাত্র কয়েক মাস।

ঘ. মানবীয় সমস্যায় ইসলামের সমাধান বাস্তব মুখী-

ইসলাম মানুষের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ জীবন্ত-যাপন পদ্ধতি। কেননা এর শিক্ষা অকার্যকর তত্ত্বগত বাগাড়ম্বর নয় বরং মানুষের যাবতীয় সমস্যার নগদ ও বাস্তব সমাধান। স্বতন্ত্র ব্যক্তি ও সামাজিক সমস্যা, উভয় ক্ষেত্রেই ইসলামে প্রত্যক্ষ ফলাফল অর্জন করে। ইসলাম একারণেও শ্রেষ্ঠতম জীবন পদ্ধতি যে, এটা বাস্তব সম্মত বিশ্বজনীন ধর্ম। কোনো জাতি অথবা জাতীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

তথ্যসূত্র:

[32] ক্বুর’আন ৫/৩৮

[33] সূরাহ নূরঃ ৩০

[34] সূরাহ নূরঃ ৩১

[35] সূরাহ আহযাবঃ ৫৯

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
skybet88 skybet88 skybet88 skybet88 mix parlay skybet88 slot bonus new member skybet88 skybet88 skybet88 slot gacor skybet88 skybet88